পহেলগামে হামলাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নিয়ন্ত্রণ রেখা। এর মধ্যে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটকের দাবি করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। যদিও এখনও পাকিস্তানি সীমান্তরক্ষীর পরিচয় প্রকাশ্যে আনেনি বিএসএফ। এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ রেখায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এটিকে সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে আটক হয়েছেন এক পাকিস্তানি রেঞ্জার। এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন গত ২৩ এপ্রিল বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণম কুমার শাহুকে আটক করে পাকিস্তান। পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে কৃষকদের পাহারা দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন শাহু। তবে আটক পাকিস্তানি রেঞ্জার বর্তমানে বিএসএফ’র রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে আছেন।
ভারত পাকিস্তান সীমান্ত ভুল করে পার হওয়া সৈন্যদের ফেরত দেয়ার প্রচলিত প্রক্রিয়া থাকলেও, সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় শাহুকে ফেরত দেয়নি পাকিস্তান। উল্টোদিকে পাকিস্তানি রেঞ্জারের ব্যাপারেও এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এনডিটিভি ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখায় গড়ে তোলে শক্ত প্রতিরোধ। দশ দিন ধরে দুই দেশের সীমান্তে প্রতিদিনই এমন গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নৌসেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টর জুড়ে এসব হামলা হচ্ছে। তবে পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটকের পর এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ বলা হচ্ছে। যদিও এখনো কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
পহেলগামের ভয়াবহ হামলায় ২৬ পর্যটকের মৃত্যুর পর মুখোমুখি অবস্থানে ভারত-পাকিস্তান। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। হামলার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে পাকিস্তানের সাথে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানি বন্টন চুক্তিও স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে শিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। চলমান পরিস্থিতির মধ্যে শনিবার আবদালি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপন করেছে পাকিস্তান। ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে খোলামেলা উস্কানি বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিলোমিটার রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান সিন্ধু মহড়ার অংশ হিসেবে পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে দেশের গণমাধ্যম।
