চট্টগ্রাম বন্দর লিজ দিলে ক্ষতি নাকি লাভ এটা বুঝতে গেলে আগে আপনাকে বুঝতে হবে ভাড়া দেয়া বা লিজ দেয়া কি! আমরা দৈনন্দিন জীবনে বাড়ি-গাড়ি, জমি ইত্যাদি ভাড়া দিয়ে টাকা ইনকাম করে থাকি সুতরাং চট্টগ্রাম বন্দর লিজ/ভাড়া দেয়াও তেমন একটা ব্যাপার।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, তাইলে অনেকেই এই বন্দর ভাড়া দেয়া নিয়ে জীবন বাজি রেখে প্রতিবাদ করছে তার কারণ কি? এখানেই মুল বিষয় লুকিয়ে আছে বাঁ এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে। একটু ভাল করে খেয়াল করুন তো আসলে কারা কারা এই বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। আসলে প্রতিবাদ তারাই করে যাচ্ছে যাদের ব্যাক্তিগত স্বার্থ লুকিয়ে আছে।
আসুন এবার একটু বিস্তারিত বুঝার চেষ্টা করা যাক। ধরুন আপনি বাড়ি ভাড়া দিয়ে কিছু টাকা পেয়ে থাকেন কারন আপনি ওই বাড়ির মালিক, তাইলে বন্দরের মালিক তো বাংলাদেশ, সুতরাং বন্দরের ইনকামের টাকা তো দেশের কোষাগারে জমা হওয়ার কথা তাই নাহ? যদি দেশের কোষাগারে জমা হয় তাইলে তো ব্যাক্তিগতভাবে আপনি এবং আমি কোন টাকা পাচ্ছি না। এখানেই মূল বিষয় লুকিয়ে আছে, যে কারা পাচ্ছে এই বড় অংকের টাকা। এই বিষয়টা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবের উপর চলে, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তারা ৬০% পায় এবং বিরোধী দল পায় ৪০%। এই নিয়ম একদম শুরু থেকে হয়ে আসছে এবং এর কোন ব্যাতিক্রম হয়নি। তাহলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যা ইনকাম হয় তা যদি রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে জায় তাতে তো জোনগণের কিনবা দেশের কোণ লাভা হোল না। এখন হয়তো আপনিও বুঝে গেছেন আসল রহস্য এবং মনে মনে গালি দিচ্ছেন হায় হায় এটা কি সুনলাম, আসলে আমি তো এই বিষয়ে আগে কখনো ভেবে দেখিনি বাঁ চিন্তাও করিনায়। জি হ্যাঁ এটাই সত্য এবং বাস্তব।
এখন আসুন চট্টগ্রামের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে ডেনমার্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এ.পি.এম টার্মিনালস ও পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালে পরিচালনা করবে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেডলগ সুতরাং চুক্তি অনুসারে লালদিয়া টার্মিনালে ৩০ বছর এবং পানগাঁওয়ে ২২ বছর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে এই প্রতিষ্ঠান দুটি। এখান থেকে যে ইনকাম হবে সেটা কোন রকম কারচুপি ছাড়ায় দেশের কোষাগারে জমা হবে এবং দেশের কাজে লাগবে।
তাহলে এবং আপনিই বিচার করুন চট্টগ্রাম বন্দর লিজ দিলে ক্ষতি নাকি লাভ হবে? আসলে আমরা কোন কিছু না বুঝে এবং চিন্তা ভাবনা না করেই সবকিছুর বিচার করে ফেলি, যাতে মূর্খতা এবং ক্ষতি ছাড়া কিছুই প্রকার পায় না।
